Shipping to EU, Switzerland
Fast, environmentally friendly shipping with DHL
Free shipping from 45€

Chapter 1 : ভূমিকা

দিভাই, শাড়ীটা ইস্ত্রী করেছিলি যখন, আঁচলটা আগে করে পিন দিয়ে দিলে পারতিস।” 

স্কাইপের পর্দাতে ভেসে এলো পিয়ার গুরুগম্ভীর স্বর।

টিয়া মিনমিন করে “পরেছি তো”, বলে আঁচল নিয়ে পড়ল।

টিয়া আর পিয়া  দুই পিঠাপিঠি বোন: একসাথে বড় হওয়া, ঝগড়া, মারামারি, আবার গলায়-গলায় বন্ধুত্ব।

তারপর বড় হয়ে ছিটকে গেল দুজনে পৃথিবীর দু প্রান্তে।

পিয়া তাও দেশে আছে, টিয়া সেই সাগরপাড়ে।

মা,বাবা একবার বড় মেয়ের কাছে, একবার ছোট মেয়ের কাছে ঘুরে আসেন।

দুজনের কেউই বিয়ে করেনি।

দুজন স্বাধীন, স্বনির্ভর মেয়েকে দেখে মাসী, পিসি বৌদিদের চিন্তা হয়।

দুই বোনের বাবা মা এ ব্যাপারে নিশ্চিন্ত। আমরা আমাদের কাজ করেছি, দুজনকেই শিক্ষিতা, ভদ্র, স্বনির্ভর হিসাবে তৈরী করেছি। মেয়েরা তাদের রুচি মত পাত্র নির্বাচন করে নেবে। ওরা দুজন আমাদের গর্ব, বোঝা নয়।

পিয়া রাশভারী সুদক্ষ অধ্যাপিকা। শাড়ী পরে যখন যায় সে, দারুণ ব্যক্তিত্বময়ী লাগে তাকে। 

টিয়া থাকে পশ্চিমদেশের এক শহরে।এক বহুজাতিক সংস্থার উঁচু পদে আছে।

কাজের জগতে তাদের দুইবোনেরই সুনাম আছে বেশ।

 ত্রিশের কাছে এসেও শাড়ী পরায় টিয়া পিয়ার মত পোক্ত হয়নি। কাজের জায়গায় স্যূট, প্যান্ট পরে, বন্ধুদের সাথে অন্য কিছু।

প্রবাসে দূর্গাপজো, বিজয়া সম্মিলনীতে ওই যা একটু পরা, বেল্ট দিয়ে, ডজনখানেক সেফটিপিন লাগিয়ে। মডার্ন ড্রেসিং বলে টলে একটা জগাখিচুড়ী করা অভ্যেস।

দিদি,বৌদিরা বলে বটে :”এখনও শাড়ী পরতে শিখলে না। বিয়ের পর কি করবে?”

টিয়া কান দেয় না। তোমাদের মত বসে বসে নিখুঁত শাড়ী পরার অভ্যেস করার সময় আমার নেই। বিয়ে করব যখন দেখা যাবে, এখন পারছি না তার জন্য তৈরী হতে।

আজকের দিনটা তবে একটু আলাদা।

আজকে টিয়া হোমড়া চোমড়াদের সামনে দেওয়ালীর আনুষ্ঠান সঞ্চালন করবে। স্কুলে পড়ার সময় ভাল সঞ্চালন করত, কলেজের পর আর হয়ে ওঠেনি এসব করা। মাঝে মাঝেই করতে ইচ্ছে করত। সুযোগ বা যোগাযোগ হয়ে উঠতনা।

অফিসের কনফারেন্সে টিয়ার দৃপ্ত বাচনভঙ্গি আর উচ্চারণ শুনে দক্ষিনী বিজয়াদি মুগ্ধ।তিনি টিয়াকে ছোটবোনের মত জড়িয়ে ধরে নিয়ে এলেন নিজের সংগঠনে।

তিনিই টিয়াকে দিয়েছেন অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব।

একটাই দাবী, টিয়া যেন শাড়ী পরে আসে। কনস্যুলেট থেকে, মেয়রের অফিস থেকে অতিথিরা আসবেন। সুন্দর করে শাড়ি পরে এলে, টিয়ার ব্যক্তিত্ব আরো ভালো করে ফুটে উঠবে।

এইভাবে যত্ন করে বললে কি আর করা যাবে? টিয়া গেল পিয়ার কাছে।

তুই শাড়ীটা আর কবে পরতে শিখবি দিভাই? কতবার বলেছি একটা গুছিয়ে পরা শাড়ীতে অন্যরকম কমনীয়তা, ব্যক্তিত্ব  ফুটে ওঠে। তুই শুনবি না।” ধমকায় পিয়া।

আচ্ছা এরপর থেকে নিয়ম করে শাড়ী পরব। এবারের মত উদ্ধার করে দে।সন্টি আমার, পন্টি আমার, তোকে মাইকেল কর্স এর ব্যাগ কিনে দেব।

ব্যাগের নামে পিয়া গলল একটু। কলেজে তো যায় ঢাউস একটা বস্তা নিয়ে,খুঁজলে বাঘের দুধ পাওয়া যাবে।এই এলিগ্যান্ট ব্যাগটার শখ হয়েছে তার,দিদি যদি কিনেই দেয় ….

মুখ গম্ভীর করে পিয়া বলল:

শোন কালো বেনারসীটা আছে?ওটার বহর ছোট আর পুরানো নরম-ওটা পরবি। কাল বার করে রাখবি। সন্ধ্যাবেলায় কুঁচি দেওয়া প্র্যাকটিস করবি আমার সামনে।

সারা সন্ধ্যা শাড়ী পরব তো লিখব কখন?? অনুষ্ঠানসূচী, পরিচয়লিপি করতে হবে না?

ভুজুং দিস না তো। তুই ওতে এক্সপার্ট।একদিনে নামিয়ে দিবি।শাড়ী পরবি,সময় নষ্ট না করে যা বলছি কর“।

টিয়া বড়দিদি হলে কি হবে, রাশভারী ছোট বোনকে বেজায় ভয় পায়। আজ অবধি তার শাড়ীর সমস্যা তো সেই বোনই সামলে এসেছে। নইলে মা তো কবেই হাত তুলে দিয়েছেন।

শুরু হল পিয়ার তত্ত্বাবধানে টিয়ার অনলাইন শাড়ী পরার ক্লাস।

ক্লাস করতে করতে, তার মন চলে গেল পিছিয়ে ছোটবেলার, মেয়েবেলার আর কলেজবেলার স্রোতে।

কালো বেনারসীটা টিয়ার প্রথম শাড়ী। শাড়ীটা পড়তে পড়তে বারবার তাই ভেসে আসছিল টুকরো টুকরো স্মৃতিকণা। শাড়ীপড়া অভ্যস করতে করতে,  টিয়ার খুব ইচ্ছা করতে লাগল নতুন করে তার মেয়েবেলাকে ছুয়ে দেখতে। তাই পিয়া যেদিন টাটা করে তাড়াতাড়ি শুতে গেল, টিয়া পুরান ডাইরি খুলে বসল।

DISCLAIMER – এই গল্পে বর্ণিত সমস্ত চরিত্র অথবা ঘটনাবলী কাল্পনিক এবং বাস্তবের সাথে কোন মিল নেই | জীবিত বা মৃত মানুষের সঙ্গে বা কোন  ঘটনার সঙ্গে কোন রকমের মিল একান্তই অনিচ্ছাকৃত |
            —————— সমাপ্ত  —————-

Chapter 1 : ভূমিকা

SAVE 10% NOW

Subscribe to our shop newsletter and save 10% on your first purchase!

We don’t spam! Read our privacy policy for more info.

2 comments

  1. Roshni Maiti

    Khub bhalo hoyeche lekhata

    1. DanceofChaos

      Thanks re

Comments are closed.